Breaking News:

ছাত্রদলের ৩০ জনের কমিটিতে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৮ জনই ছাত্রলীগের

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবাচিম) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ১১ বছর পর ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত সোমবার কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন ৩০ সদস্যের এ কমিটি অনুমোদন দেন। তবে নবগঠিত কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৮ জনেরই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার বিকেলে ছাত্রদলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়। নতুন কমিটিকে এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু এতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে ক্যাম্পাসে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট শেবাচিম একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলেজে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে সব ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত অমান্য করে সম্প্রতি ছাত্রদলের ব্যানারে একটি মিছিল হয় এবং পরে কেন্দ্র থেকে সরাসরি কমিটি ঘোষণা করা হয়।

🔹 বিতর্কিত নেতৃত্বে ছাত্রলীগপন্থীরা

নতুন কমিটির সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান প্রিন্স অতীতে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক এমপি জাহিদ ফারুক শামীমের উপস্থিতিতে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। ছাত্রলীগের পক্ষেও তাকে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

একইভাবে, নতুন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফাহিদ ২০২৩ সালের বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। নৌকার পক্ষে লিফলেট বিতরণ ও সভা-সমাবেশে তার সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রমাণ মিলেছে।

এ ছাড়া সহসভাপতি জুবায়ের আল মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুল হাকিম আদিল, যুগ্ম সম্পাদক রাগীব মাহফুজ, শাওন আহমেদ, সহ সম্পাদক হাসিবুল হক শান্ত, সিয়াম হোসেন, সাহিত্য সম্পাদক এন এম রোহান, সামাজিক যোগাযোগ সম্পাদক তীর্থ মণ্ডলসহ অন্তত ১৮ জন নেতা ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

🔹 স্থানীয় নেতাদের ক্ষোভ

বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি সাকিবুল হক রাসেল বলেন,

“বরিশালে ত্যাগী নেতাকর্মীদের অভাব নেই। কিন্তু ব্যক্তিগত পছন্দের কারণে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে ছাত্রলীগের নেতাদের সংযুক্ত করা হয়েছে। এর দায়ভার মহানগর বিএনপি ও ছাত্রদল কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।”

বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি জানান,

“শেবাচিম ছাত্রদল সব সময় মহানগর কমিটির অধীনে ছিল। এবার কেন্দ্র থেকে সরাসরি কমিটি দেওয়া হয়েছে, এতে ছাত্রলীগের পুনর্বাসন ঘটলে তার দায় মহানগর কমিটির নয়।”

এ বিষয়ে নবগঠিত সভাপতি আসাদুজ্জামান প্রিন্সের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি বলেন,

“আমি ক্লাসে আছি, এখন কথা বলতে পারব না।”
পরে বারবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি দীপু পাটোয়ারী ছিলেন কমিটি গঠনের যাচাই-বাছাই টিমের প্রধান। তবে তার সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

🔹 পটভূমি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে শেবাচিমে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়। তবে এ নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনকে অনেকেই “রাজনৈতিক প্রহসন” হিসেবে দেখছেন।

Do not copy our site contents, content copied is totally illegal from our website.
Alert! This website content is protected!